ব্যক্তিগত পেনশন বীমা পলিসি

67
ব্যক্তিগত পেনশন বীমা পলিসি

পেশাজীবী ও কর্মজীবী মানুষ স্বভাবতঃই অবসর জীবনে নিরুদ্বেগ স্বচ্ছল শান্তিময় দিন যাপনের নিশ্চয়তা চান। পরিণত বয়সে যখন নিয়মিত আয়ের কোন নিশ্চয়তা থাকে না, পেনশন বীমা পলিসি (ব্যক্তিগত পেনশন বীমা পলিসি) ঠিক তখনই নিয়মিত মাসিক অর্থাগমের ব্যবস্থা করে। অবসর জীবনের আর্থিক প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখেই তৈরী করা হয়েছে আমাদের পেনশন বীমা পরিকল্পনা। যে কোন পেশায় নিয়োজিত মানুষ এই পলিসি নিতে পারেন। এর অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো কর্মজীবনে অকাল মৃত্যুতে পরিবারের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা বিধান যা অন্য কোন সঞ্চয় মাধ্যমে সম্ভব নয়।

 

পেনশন বীমার আকর্ষণ/সুবিধাদিঃ

  • একই সাথে কর্মজীবনে অকাল মৃত্যুতে জীবন বীমার আর্থিক নিরাপত্তা এবং অবসর জীবনের জন্য আমরণ পেনশনের ব্যবস্থা।
  • পেনশন প্রদান শুরুর ১০ (দশ) বছরের মধ্যে বীমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে দশ বছরের বাকী সময়ের জন্য পেনশনভোগীর মনোনীতকের (নমিণীর) পেনশন লাভের গ্যারান্টি।
  • পেনশন প্রদান শুরুর নির্ধারিত তারিখের পূর্বে বীমাগ্রহীতার স্বাভাবিক মৃত্যু হলে নিম্নোক্ত বকল্পের যেটিতে বেশী অর্থ পাওয়া যায়, তা মনোনীতককে এককালীন পরিশোধের নিশ্চয়তা,

(ক) প্রথম বছরের প্রিমিয়াম বাদে প্রদত্ত সকল প্রিমিয়াম ৭% লাভসহ প্রদান:

অথবা

(খ) একটি বার্ষিক প্রিমিয়ামের ১৫ (পনের) গুণ অর্থ প্রদান।

(গ) অর্নদিকে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বীমার ক্ষেত্রে (DIAB) সহ পলিসির ক্ষেত্রে) দুর্ঘটনার সাথে সাথে অথবা দুর্ঘটনার কারণে ৯০ দিনের মধ্যে বীমাগ্রহীতার মৃত্যু হলে সেক্ষেত্রে বার্ষিক প্রিমিয়ামের ৩০ গুণ অর্থ নমিনীক প্রদান করা হয়।

(ঘ) মেয়াদ পূর্তিতে পেনশনের টাকার ৫০% অথবা ১০০% সমর্পণ (কম্যুটেশন) করে এককালীন টাকা পাওয়ার সুবিধা।

(ঙ) বীমাপত্রের অনুকূলে বীমাগ্রাহক প্রয়োজনে ঋণ গ্রহণ করতে পারেন।

(চ) জীবন বীমার অন্যান্য পলিসির মতো পেনশন বীমার টাকা আয়করমুক্ত। প্রদত্ত প্রিমিয়ামের উপরেও আয়কর রেয়াত পাওয়া যায়।

                                                 উদাহরণ

যদি ৩৫ বছর বয়স্ক কোন ভদ্রলোক তাঁর ৫৭ বছর বয়স পূর্তির পর থেকে মাসিক ৫,০০০/- টাকা পেনশনের জন্য একটি পেনশন বীমা পলিসি গ্রহণ করেন। তাঁর প্রিমিয়াম এবং সুবিধাবলী হবে নিম্নরূপঃ

মাসিক ১০০/- টাকার জন্য এক বছরের প্রিমিয়াম ১৮৪.২০ টাকা

মাসিক ৫,০০০/- টাকার জন্য এক বছরের প্রিমিয়া ১৮৪.২০ x ৫০

=৯,২১০.০০ টাকা

অর্থাৎ বার্ষিক প্রিমিয়াম দিবেন ৯,২১০/= টাকা। এর পরিবর্তে মেয়াদপূর্তিতে (মাসিক ৫,০০০/= টাকা হিসাবে) তিনি বার্ষিক পেনশন পাবেন (৫,০০০ x ১২) = ৬০,০০০/= (ষাট হাজার) টাকা।

৫৭ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি জমা দেবেন,

(৯,২১০ x২২) = ২,০২,৬২০.০০ টাকা। বার্ষিক ৯,২১০/- টাকা প্রিমিয়াম দিলে তিনি যে আয়কর রেয়াত লাভ করবেন তা হিসাবের মধ্যে ধরলে প্রিমিয়াম খাতে প্রকৃত ব্যয় আরো কম হবে।

প্রিমিয়ামঃ কেবলমাত্র বার্ষিক বা ষান্মাষিক কিস্তিতে প্রদানযোগ্য।

সুবিধাদি

১। ‘’৫৭ বৎসর পূর্তির পর থেকে বীমাগ্রহীতা যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন পর্যন্ত ৫,০০০/= (পাঁচ হাজার টাকা) করে প্রতি মাসে নিয়মিত পেনশন পাবেন। এই অর্থ প্রতি মাসে তাঁর ব্যাংক একাউন্টে পৌঁছে যাবে’’।

গ্যারান্টিকৃত দশ বছরে তিনি পাচ্ছেনঃ

২। প্রতিমাসে ৫,০০০/= টাকা হিসাবে (৫,০০০ x ১২x ১০) = ৬,০০,০০০/= টাকা। এর পরেও তিনি যতদিন জীবিত থাকবেন নির্ধারিত পেনশন পেতেই থাকবেন।
৩। পেনশন শুরু হওয়ার সময় তিনি ইচ্ছা করলে মাসিক পেনশনের অর্ধেক অথবা সম্পূর্ণ সমর্পণ করে এককালীন টাকা নিতে পারবেন। যদি তিনি মাসিক পেনশনের ৫০% (অর্ধেক) সমর্পণ করেন সেক্ষেত্রে তিনি এককালীন ২,৫৩,৪৫০/= টাকা পাবেন। উক্ত এককালীন টাকা ছাড়াও যথারীতি মাসিক পেনশন হিসাবে আজীবন প্রতিমাসে ২,৫০০/= টাকা পাবেন।

 

জীবন বীমা কর্পোরেশনের ব্যক্তিগত পেনশন বীমা পলিসি জীবনের ঝুঁকি গ্রহণের সংগে অবসর জীবনের জন্যে আজীব পেনশনের নিশ্চয়তা দেয়।

এতে রয়েছে ন্যূনতম দশ বছরের গ্যারান্টিসহ আজীবন পেনশনের ব্যবস্থা। চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ী বা অন্য যে কোনো স্বাধীন পেশাজীবী সকলেই এই পলিসি নিতে পারেন। স্বচ্ছল অবসর জীবনের জন্যে পেনশনের সুবিধা কে না চায়?