ফারইষ্ট লাইফের ৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় জেলহাজতে সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল

186

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রায় ৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের আরো একটি মামলায় গত শুক্রবার (৩১ মার্চ) গুলশানের একটি হোটেল থেকে ফের গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম।

 

গত ৩০ মার্চ (বৃহস্পতিবার) শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়, মামলা নং ৫৭। কোম্পানির একাউন্ট থেকে চেকের মাধমে টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে এজাহারে বলা হয়। মামলায় নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তাসলিমা ইসলাম সহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়।

 

গত ৩০ মার্চ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর শাহবাগ থানায় নতুন এই মামলা দায়ের করেন বীমা কোম্পানিটির আইন কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন। দণ্ড বিধির ৪২০, ৪০৬, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৩৪ ধারায় এই মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।

 

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেক ফারইস্ট ইসলামী লাইফে একক আধিপত্য বিস্তার করে অন্য আসামির যোগসাজসে এসব টাকা আত্মসাৎ করেন। একইসাথে অন্য আসামিরা নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেককে টাকা আত্মসাতের সহযোগিতা করে নিজেরাও আর্থিকভাবে লাভবান হন।

 

এর আগে ২০২২ সালের ৮ মার্চ ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ৯ পরিচালক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক’র দায়ের করা পৃথক দু’টি মামলায় গ্রেফতার হন নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেক। পরে জামিন পান নজরুল ইসলাম।

 

ডিবি কর্মকর্তা (পুলিশ পরিদর্শক) গাজী সালাহ উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ওই মামলায় কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে শুক্রবার (৩১ মার্চ) গুলশানের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই দিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

 

ডিবি কর্মকর্তা আরো জানান, এই মামলার আরেক আসামি এম এ খালেক আরেকটি মামলায় আগে থেকেই জেলহাজতে রয়েছেন। এ নিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে এই মামলায়। বর্তমানে মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

 

২০১৮ সালের ৩০ মে থেকে ২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ফারইস্ট ইসলামী লাইফের একাউন্ট থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে চেক ইস্যু করে ৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা নগদ তুলে তা আত্মসাৎ করা হয়। এসব চেকে স্বাক্ষর করতেন কোম্পানিটির তৎকালীন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত উল্লাহ ও কোম্পানির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমগীর কবির।

 

চেকগুলো ইস্যু করা হত বিভিন্ন ব্যক্তির নামে। পরে এসব চেক দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতেন কোম্পানিটির সাবেক এসএভিপি (ব্যাংকিং শাখা) শেখ আব্দুর রাজ্জাক, এফএভিপি (ব্যাংকিং শাখা) মোহাম্মদ মকবুল এলাহী, এভিপি এন্ড পিএস টু চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, এসইভিপি (আইটি) মো. মাজেদুল ইসলাম, জেএসভিপি (রিয়েল এস্টেট) মো. শাহ আলম, এসভিপি এন্ড ইনচার্জ (ব্রাঞ্চ কন্ট্রোল) মো. ফিরোজ শাহ আলম এবং হেড অব ইন্টার্নাল অডিট এন্ড কমপ্লায়েন্স মো. কামাল হোসেন হাওলাদার।

 

মামলার এজাহারে বলা হয়, নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেক কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে আধিপত্য বিস্তার করেন। কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক, শেয়ার হোল্ডার পরিচালক, অডিট কমিটি সহ অন্যান্য কমিটির চেয়ারম্যান নিয়োগ সব কিছুই নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেকের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

 

এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেককে পরিচালকদের মধ্যে সহযোগিতা করতেন সাবেক পরিচালক শাহরিয়ার খালেদ, এম এ খালেকের ছেলে; সাবেক পরিচালক রুবাইয়াত খালেদ, এম এ খালেকের ছেলে; সাবেক পরিচালক তাসলিমা ইসলাম, সাবেক পরিচালক ও চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের স্ত্রী; সাবেক পরিচালক মো. তানভির হক; সাবেক পরিচালক কে এম খালেদ; সাবেক পরিচালক কাজী ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ; সাবেক পরিচালক এ কে এম মনিরুল ইসলাম (মোহন) এবং সাবেক পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।